শুক্রবার, মধ্যদুপুর। কঠোর লকডাউনের নবম দিনে (৯ জুলাই) আনুমানিক ষাট বছরের এক রিকশাচালককে প্রখর রোদে এক তরুণীকে নিয়ে রাজধানীর পলা’শী থেকে নীলক্ষেত মোড়ের দিকে এগিয়ে যেতে দেখা যায়।
রাস্তায় পথচারী ও অন্যান্য যানবাহনের যাত্রীদের সবার দৃষ্টি রিকশাচালক ও যাত্রীর দিকে। কারণ রিকশারোহী ওই তরুণী হুড উঠিয়ে বসে একটু সামনে ঝুঁকে হাতের ছাতাটি মেলে ধরেছেন বৃদ্ধ রিকশাচালকের মা’থার ওপর।
হঠাৎ করে এমন দৃশ্য দেখে যে কারও মনে হবে যেন কোনো নাট’কের শুটিং চলছে। পরিচালক দর্শক টানতে নাট’কের গল্পে রিকশার যাত্রী তরুণীকে মানবিক চরিত্রের অধিকারী দেখাচ্ছেন। তরুণী ভ্যাপসা গরমে বৃদ্ধ রিকশাচালককে দরদর করে
ঘামতে দেখে দয়াপরবশ হয়ে বৃদ্ধ রিকশাচালকের মা’থায় ছাতা মেলে ধরেছেন। দৃশ্যধারণ শেষে পরিচালক কাট বললেই হয়তো শুটিং শেষ! কিন্তু এটা নাট’কের শুটিং নয়, গত শুক্রবার মধ্যদুপুরে বাস্তবেই চোখে পড়ে এমন দৃশ্য।
কৌতূহলবশত এ প্রতিবেদক রিকশাচালক ও যাত্রীর অগোচরেই তাদের পিছু নেন। রিকশাটি নীলক্ষেত, নিউমা’র্কেট ও বিজিবি তিন নম্বর গেট হয়ে ছোট গলিপথে নতুন পল্টন লাইনের একটি বাসার সামনে এসে থামে।
বকশি’বাজার থেকে বাসার গেটে এসে রিকশা পৌঁছানোর আগেপর্যন্ত পুরো রাস্তায় ভ্যাপসা গরমের হাত থেকে রক্ষা পেতে ওই তরুণী ছাতাটি সারাক্ষণ বৃদ্ধ রিকশাচালকের মা’থার ওপর ধরে রাখেন।
এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে মিফতাহুল জান্নাত মিতু নামের ওই তরুণী জানান, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক স’ম্পর্ক বিভাগে অধ্যয়ন করছেন।
তিনি বকশি’বাজারে টিউশনি করতে যান। গত দুদিন ধরে প্রচণ্ড গরমের কারণে তিনি সাথে করে ছাতা নিয়ে যান। রিকশায় উঠে বসার পর আর ছাতা প্রয়োজন হয় না।
মিতু বলেন, বৃহস্পতিবার যে রিকশাটিতে তিনি উঠেছিলেন ওই রিকশাচালক গরমে দরদর করে ঘামছিলেন আর বলছিলেন, অনেক রোদ, গরমে রিকশা টানতে খুব ক’ষ্ট হচ্ছে। তার সঙ্গে ছাতা থাকলেও লোকলজ্জার সংকোচে ছাতাটি ওই চালকের মা’থায় ধরতে পারেননি।
কিন্তু বাসায় আসার পর গরমে রিকশা টানতে ক’ষ্ট হচ্ছে- এ কথাটি বারবার মনে পড়ে তাকে পীড়া দেয়। তিনি ভাবেন এ গরমে তার বাবা-মা কিংবা অন্য কোনো স্বজনও এমন ক’ষ্ট পেতে পারতেন। এ কথা মনে করেই এ সময় তিনি মনে মনে সিদ্ধান্ত নেন এরপর থেকে রোদ হোক বৃষ্টি হোক তিনি রিকশাচালকের মা’থায় ছাতা ধরবেন।
বৃদ্ধ রিকশাচালক সুলতান মিয়া জানান, তিনি ৭০ টাকা ভাড়ায় সোয়ারীঘাট থেকে এ যাত্রীকে নিয়ে এসেছেন। রিকশা নিয়ে রওনা হওয়ার পর তিনি লক্ষ করেন তরুণীটি ছাতা খুলে তার মা’থায় ধরে রেখেছেন। ইতস্ততবোধ করে নিষেধ করলেও তরুণী শোনেননি।সুলতান মিয়া জানান,
বয়স হয়েছে, আগের মতো রিকশা টানতে পারেন না। এ করোনকালে গরম ও বৃষ্টিতে মাস্ক পরে যাত্রীসহ রিকশা টানতে ক’ষ্ট হয়। গরমের হাত থেকে বাঁ’চাতে তরুণী তার মা’থায় ছাতা তু